এক মঞ্চ থেকে জম্মু-কাশ্মিরের সাংবিধানিক মর্যাদা ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিলেন প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতি, বামপন্থি নেতা ইউসুফ তারিগামি।
বৃহস্পতিবার শ্রীনগরে গুপকার রোডে ন্যাশনাল কনফারেন্সের সভাপতি ফারুক আবদুল্লার বাড়িতে বৈঠকে বসেছিলেন পিডিপি সভানেত্রী মেহবুবা মুফতি, সিপিআই (এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইউসুফ তারিগামি, পিপলস কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ লোন ও পিপলস মুভমেন্টের নেতা জাভেদ মীর ।
দু ঘণ্টার বৈঠক শেষে জোটের পক্ষ থেকে ফারুক আবদুল্লা সাংবাদিকদের বলেন, ‘সকলে মিলে জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জোটের নাম “পিপলস এলায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লারেশন”।‘
ফারুক আবদুল্লা বলছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে সংখ্যার জোরে জম্মু, কাশ্মির আর লাদাখ থেকে যা ছিনিয়ে নিয়েছে, তা ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই এই জোট। আমাদের এই লড়াই হলো সাংবিধানিক লড়াই। ২০১৯-এর ৫ আগস্টের আগে জম্মু-কাশ্মিরের যে সাংবিধানিক মর্যাদা ছিল, তা ফিরিয়ে আনতে লড়াই চালাবে এই জোট।’
২০১৯-এর ৫ আগস্ট ভারতের পার্লামেন্টে জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা সম্পর্কিত সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রস্তাব গৃহীত হয়। জম্মু-কাশ্মির থেকে লাদাখকে আলাদা করে দেওয়া হয়। আর জম্মু-কাশ্মিরকে কেন্দ্রশাসিত রাজ্যে পরিণত করা হয়।
কেন্দ্র একটা বড় পরিবর্তন আনছে, এটা আঁচ করতে পেরে ৪ আগস্ট ফারুক আবদুল্লার বাড়িতে মিলিত হয়ে জম্মু-কাশ্মিরের বিরোধী নেতারা একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করেন। বিভিন্ন দলের সঙ্গে কংগ্রেসও স্বাক্ষর করেছিল ওই ঘোষণাপত্রে।
'গুপকার ডিক্লারেশন' শীর্ষক ওই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করার আগেই নেতাদের গৃহবন্দি অথবা জেলবন্দি করে ফেলে সরকার।
গত তিন-চার মাস ধরে দফায় দফায় জম্মু-কাশ্মিরের নেতাদের মুক্তি দেয় সরকার। গত ২২ আগস্ট আবার গুপকার রোডে ফারুক আবদুল্লার বাড়িতে বৈঠকে বসেন নেতারা। সেই বৈঠকে এক বছর আগের 'গুপকার ডিক্লারেশন' কিছুটা সংশোধন, সংযোজন করে 'গুপকার ডিক্লারেশন ২' তে স্বাক্ষর করেন সবাই।
ওই বৈঠকে মেহবুবা মুফতি থাকতে পারেননি গৃহবন্দী হওয়ার কারণে। ১৪ মাস পর ১৩ অক্টোবর সরকার মুক্তি দেয় মেহবুবা মুফতিকে। তার মুক্তির পরই এই জোট গড়ার কাজ দ্রুত গতিতে এগোয়।
জোট গড়ার আগে এদিন বৈঠকে বসে রাজনৈতিক দলগুলি। তবে অসুস্থতার কারণে এ দিনের বৈঠকে আসতে পারেন নি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গুলাম আহমেদ মীর।